নিউক্লিয়ার ফিউশন এবং নিউক্লিয়ার ফিশন বিক্রিয়া
নিউক্লিয়ার ফিউশন এবং নিউক্লিয়ার ফিশন বিক্রিয়া বলতে কি বোঝ? আবিষ্কারক এবং পার্থক্য উদাহরণ সহ আলোচনা করা হয়েছে
নিউক্লিয় ফিশন:
নিউক্লিয়ার ফিশন বিক্রিয়ায় একটি ভারী পরমাণুর নিউক্লিয়াস ভেঙ্গে প্রায় সমান ভরের দুটি নিউক্লিয়াস তৈরি হয়। এবং প্রচুর শক্তি নির্গত হয় তাকে নিউক্লিয়ার ফিশন বিক্রিয়া বলে।
ইউরেনিয়াম নিউক্লিয়াস কে উচ্চশক্তি সম্পন্ন নিউট্রন দিয়ে আঘাত করলে নিউক্লিয়াসে ফিশন ঘটে-
²³⁵U₉₂ + ₀n¹ ⇒ ¹⁴¹Ba₅₆ + ⁹²kr₃₆ + 3₀n¹ + শক্তি (২০০ Mev)
এ প্রক্রিয়া ১৯৩৯ সালে আবিষ্কার করেন জার্মান বিজ্ঞানী অটোহান এবং তার দুজন সহযোগে স্টার্সমেন ও মাইটনার।
নিউক্লিয়ার ফিউশন
নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়ায় একাধিক হালকা নিউক্লিয়াস একত্রিত হয়ে একটি ভারী নিউক্লিয়াস গঠন করে এবং প্রচুর শক্তি নির্গত করে , তাকে নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়া বলে।
এ বিক্রায়াটি অধিক পরিমাণ তাপমাত্রায় সংগঠিত হয় বলে একে তাপীয় নিউক্লিয় বিক্রিয়া বলা হয়।
এ বিক্রিয়াটি সাধারণ হাইড্রোজেন দ্বারা সংঘটিত হয় না। এর আইসোটোপ ডিউটোরিয়াম ও ট্রিটিয়াম ব্যবহার করা হয়।যখন 800 kms⁻¹ বেগসম্পন্ন ট্রিটয়াম নিউক্লিয়াসের সাথে ডিউটেরিয়াম নিউক্লিয়াসের সংঘর্ষ ঘটে , তখন ফিউশন প্রক্রিয়ায় হিলিয়াম নিউক্লিয়াস গঠিত হয় এবং প্রচুর শক্তি নির্গত হয়।
³H₁ + ²H₁ ⇒ ⁴He₂ + ¹n₀ + শক্তি
১৯৩৯ সালে জার্মান বিজ্ঞানী বেথে মতপ্রকাশ করেন সূর্যের উচ্চ তাপমাত্রার কারণ ফিউশন প্রক্রিয়া।
নিউক্লিয়ার ফিউশন এবং নিউক্লিয়ার ফিশন বিক্রিয়ার পার্থক্য -
নিউক্লিয় ফিশন
১. এ প্রক্রিয়ায় একটি ভারী নিউক্লিয়াস প্রায় সম আকারের দুটি নিউক্লিয়াসে বিভক্ত হয়।
২. এটি বিয়োজন প্রক্রিয়া।
৩. এটি ভারী নিউক্লিয়াসের ক্ষেত্রে ঘটে।
৪. এর জ্বালানি উৎস পৃথিবীতে সীমিত।
৫. নিউক্লিয়াস দ্বারা নিউট্রন আটক এর ফলে এ প্রক্রিয়া শুরু হয়।
৬. এ প্রক্রিয়া শেষে তেজস্ক্রিয় পদার্থ উৎপন্ন হয়।
৭. নিয়ন্ত্রণ দন্ডের সাথে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
৮. নিউটন দ্বারা এ প্রক্রিয়া আরম্ভ হয়।
৯. প্রকৃতিতে মাত্র কয়েকটি রেডিও আইসোটোপ ছাড়া আর কোথাও এ প্রক্রিয়া ঘটতে দেখা যায় না।
১০. মাত্র কয়েকটি দেশের সীমিত শক্তির উৎপন্ন করা সম্ভব হয়েছে।
১১. এ প্রক্রিয়া সাধারণত চালু হয় শৃংখল বা ধারাবাহিক বিক্রিয়া দ্বারা।
১২. এই প্রক্রিয়া দিয়ে পারমাণবিক বোমা তৈরি করা হয়েছে।
নিউক্লিয় ফিউশন
১. এটি সাধারণত বা ততোধিক হালকা নিউক্লিয়াস একত্রিত হয়ে একটি ভারী নিউক্লিয়াস গঠন করে।
২. এটি সংযোজন প্রক্রিয়া।
৩. হালকা নিউক্লিয়াস এর ক্ষেত্রে ঘটতে দেখা যায়।
৪. অল্প ব্যয় করে প্রচুর পরিমাণ জ্বালানি পাওয়া যায়।
৫. উচ্চচাপ ও তাপমাত্রার প্রভাবে এ প্রক্রিয়া শুরু হয়।
৬. প্রক্রিয়াটি শেষে কোন তেজস্ক্রিয় পদার্থ উৎপন্ন হয় না।
৭. এটি চুম্বক ক্ষেত্র দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
৮. এ প্রক্রিয়াটি প্রোটন দিয়ে শুরু হয়।
৯. সূর্যের মধ্যে এই প্রক্রিয়াটি অনবরত ঘটছে।
১০. শক্তি উৎপাদনে এর গবেষণা অনেক সীমিত।
১১. শৃংখল বা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া দিয়ে এটি চালু হয় না।
১২. এটি দিয়ে হাইড্রোজেন বোমা তৈরি হয়েছে।
আরো দেখুন: ১. ইলেকট্রন ও হোলের ধারণা
২. ট্রানজিস্টর