কাজ কাকে বলে? কাজের প্রকারভেদ।

    কাজ কাকে বলে? কাজের প্রকারভেদ

কাজ কী

পদার্থবিজ্ঞান এর ভাষায় কোন কিছু করাকে কাজ বলা হয় না। কাজের পরিমাপ ও প্রকৃতি সম্পর্কে জানতে হলে দুটি রাশি জেনে রাখা দরকার একটি বল অন্যটি সরন। কাজ সৃষ্টি করার জন্য দরকার বল ও সরন। কাজ হচ্ছে বল ও সরনের স্কেলার গুনফল।

বল ও সরন ভেক্টর রাশি হলেও কাজ কাজ হচ্ছে স্কেলার রাশি।

" বল প্রয়োগে যদি  বস্তুর হয় তাহলে বল ও বলের দিকে বস্তুর সরনের উপাংশের গুনফলকে কাজ বলে।"

কাজ কাকে বলে? কাজের প্রকারভেদ।
চিত্র:কাজ 

কোন বস্তুকনার উপর প্রযুক্ত বল F হলে F এর দিকের সাথে θ কোনে বস্তুর সরন S হলে , কাজের সংজ্ঞা অনুযায়ী,

W = বল × বলের দিকের সাথে সরনের উপাংশ

      = F(S cosθ)

অথবা,

কাজ W = সরন × সরনের দিকে বলের উপাংশ

             = S (F cosθ)

কাজের একক : 

এসআই একক হচ্ছে জুল (J) অথবা Nm অথবা kgm²s⁻²।

    •সিজিএস পদ্ধতি একক হচ্ছে - gm cm

    •এমকেএস পদ্ধতি একক হচ্ছে - kg m

    •এফপিএস পদ্ধতি একক হচ্ছে - ft lb

জেনে রাখা ভালো-

    •1 জুল= 10⁷ আর্গ

    •1 নিউটন= 10⁵ ডাইন

  কাজের মাত্রা:

[W] =[ML²T⁻²]

রাশি :

কাজ হচ্ছে স্কেলার রাশি। 

কাজের প্রকারভেদ -

কাজকে আমরা ৩ ভাগে ভাগ করতে পারি যথা:

       ১. বলের দ্বারা কাজ বা ধনাত্মক কাজ

       ২. বলের বিরুদ্ধে কাজ বা ঋণাত্মক কাজ এবং

       ৩. শুন্য কাজ।

১. বলের দ্বারা কাজ বা ধনাত্মক কাজ:

বল প্রয়োগের ফলে যদি বলের দিকে সরনের উপাংশ থাকে তাহলে সেই বল ও সরনের উপাংশের গুনফলকে ধনাত্মক কাজ বলে।

     W = Fs cosθ

       θ = 0° হলে cosθ = 1

      W = Fs

বলের দ্বারা কাজে বস্তুর গতিশক্তি বৃদ্ধি পায় আর স্থিতি শক্তি হ্রাস পায় এবং বলের দ্বারা কাজে ত্বরন হয়।

ধনাত্মক কাজের সীমা হচ্ছে 0°≤ θ< 90°।

উদাহরণ:

     ১. একখানি বই টেবিলের উপরে থেকে ফেলে দিলে।

     ২. কোন গতিশীল বস্তুকে বল প্রয়োগের ফলে যদি বলের দিকে সরন হয়।

     ৩. ছুরি দিয়ে সবজি কাটা

      ৪. ফুটবলকে লাথি মেরে গোলকিপারের দিকে পাঠানো

     ৫. হুইলচেয়ারে রোগীকে ঠেলে নিয়ে যাওয়া 

      ৬. সুটকেস টেনে সামনে নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি।

২. বলের বিরুদ্ধে কাজ বা ঋণাত্মক কাজ

বল প্রয়োগের ফলে যদি বলের বিপরীত দিকে সরন হয় তাহলে বলের বিরুদ্ধে কাজ বা ঋণাত্মক কাজ বলে।

W= FS cosθ

   যদি θ= 180° হয় তাহলে

W= -FS 

বলের বিরুদ্ধে কাজে গতিশক্তি হ্রাস পায় স্থিতি শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং বলের বিরুদ্ধে কাজে মন্দন হয়।

ঋণাত্মক কাজের সীমা: 90⁰<θ≤180⁰

উদাহরণ:-

১. একখানি বই টেবিলের উপরে উঠানো

২. আমরা যখন রাস্তায় হাঁটা শুরু করি তখন ঘর্ষন বলের সাথে সরন ঋণাত্মক কাজের উদাহরণ

৩. যখন একটা বলকে উপরের দিকে নিক্ষেপ করা হয়, তখন অভিকর্ষের বিরুদ্ধে কাজ করা হয়।

৪. গতিশীল গাড়িকে ব্রেক করে থামিয়ে দেওয়া হচ্ছে ঋণাত্মক কাজের উদাহরণ।

৫. স্প্রিয়ের প্রত্যয়ণি বলের সাথে সরনের কৃতকাজকে বলা যেতে পারে।

৩. শুন্য কাজ

বল ও সরন যদি লম্বভাবে কাজ করে তাহলে তাকে শুন্য কাজ বলে।

অভিকর্ষ বল সাথে সরনের কৃতকাজকে আমরা শুন্য কাজ বলতে পারি।

W= Fs cosθ

যদি θ= 90° হয় তাহলে

W= 0 হবে।

 উদাহরণ:-

১. বৃত্তাকার পথে কৃতকাজ শুন্য কাজ কারন বৃত্তাকার পথে বস্তুর সরনের সাথে কেন্দ্রমুখি বল লম্বভাবে কাজ করে তাই কৃতকাজ শুন্য হয়ে থাকে।

২. স্যুটকেজ নিয়ে চলার সময় স্যুটকেজকে অভিকর্ষ বল ক্রিয়া করে আর মানুষের সরনের সাথে এই বল সমকোনে তাই এর কাজ শুন্য কাজের উদাহরণ।

৩. সরল দোলকের সুতার টান এর সাথে সরন সর্বদা লম্বভাবে কাজ করে তাই এটাও শুন্য কাজ বলা যেতে পারে।

৪. চালের বস্তা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলে কৃতকাজ শুন্য।

বিশেষ ক্ষেত্রে কয়েকটি কাজ

(১) স্প্রিং বল দ্বারা কৃতকাজ, W = 1/2 kx²

এখানে k = বল ধ্রুবক

এবং x = স্প্রিং এর সরন।

(২)  সরল দোলকের দ্বারা কৃতকাজ,       

              W = wₚl (1-cosθ)

এখানে, wₚ =T cosθ  হচ্ছে দোলকপিন্ডের ওজন

 l = সুতার দৈর্ঘ্য। যেখানে s= lθ , s হচ্ছে সরন।

(৩) অভিকর্ষ বল দ্বারা কৃতকাজ

W = GMm[1/rₘ-1/rₙ]

অথবা

W= mgh



১. একটি বস্তুর ভরবেগ 100% বাড়ানো হলে তার গতিশক্তি শতকরা কত বাড়বে? 

২.গতিশক্তি ৫০% বৃদ্ধি করলে ভরবেগ কত শতাংশ হবে   

আরো পড়ুন: শক্তির সংরক্ষণ সুত্র। যান্ত্রিক শক্তির নিত্যতা।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url